• রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ১১:২৯ অপরাহ্ন

আইনজীবী হত্যায় ছেলেসহ ৩ জনের ফাঁসি

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৩৮ টাইম ভিউ
আপডেটঃ বুধবার, ৭ মে, ২০২৫

সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মো. শামসুল ইসলাম চৌধুরী হত্যা মামলায় তার ছেলেসহ তিনজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট বিভাগীয় স্পেশাল জজকোর্টের বিচারক মো. শাহাদাত হোসেন প্রামাণিক এ রায় দেন।এ সময় একজনকে তিন বছরের কারাদণ্ড ও আরেকজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

রায়ে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির মধ্যে একজন হলেন শামসুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে মসুদ আহমদ চৌধুরী (মুন্না)। বাকি দুজন হলেন মো. জাহের আলী ও মো. আনসার আহমেদ। একই রায়ে তাদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর মামলার রায়ে মাইক্রোবাসচালক মো. বোরহান উদ্দিনকে তিন বছরের কারাদণ্ড এবং পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া এ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া মো. ইসমাইল হোসেন রানুর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস প্রদান করেছেন আদালত।

জানা গেছে জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতির মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য শুরু হয় নগরজুড়ে। ছেলে মাসুদ আহমদ চৌধুরী মুন্না ২০১১ সালের ২২ জুলাই কোতোয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করলেও এর পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। পরে সন্দেহের কারণে সে বছরের ১৯ আগস্ট মুন্নার স্ত্রী জাহেদা খানম জানুসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এরপর বেরিয়ে আসে অর্থ-সম্পদের জন্য ছেলের পরিকল্পনায় বাবাকে হত্যার নির্মম সত্য।

সে সময়ে র‌্যাব এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিল, অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম চৌধুরীর চার মেয়ে ও দুই ছেলের মধ্যে দুই ছেলে অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী। মেয়েরা ঢাকা ও সিলেটে শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। বড় ছেলে মো. মাহমুদ আহমদ চৌধুরী সপরিবারে ঢাকায় থাকায় ছোট ছেলে মাসুদ চৌধুরী মুন্নাকে নিয়ে শামসুল ইসলাম চৌধুরী সিলেটের বাসায় থাকতেন।

শামসুল ইসলামের সব সম্পত্তি নিজের নামে নিতে ব্যর্থ হয়ে বৃদ্ধ বাবাকে খুনের পরিকল্পনা করেন মুন্না। শবেবরাতের রাতে বোরহান, আনসার এবং জাহের আলীকে নিয়ে মুন্না যখন বাবাকে খুন করতে যান তখন রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টা। সে সময় নামাজরত শামসুল ইসলামের মুখ চেপে ধরে তাকে মাটিতে চিৎ করে শোয়ান জাহের আলী। আনসার আলী দুই হাত চেপে ধরেন। আর মুন্না মুখোশ পরে তার বাবার দুই পাঁজরে বিষাক্ত ইনজেকশন পুশ করেন। এরপর জাহের আলী জোর করে শামসুল ইসলামকে ঘুমের বড়ি খাওয়ান। আনসার ও জাহেরের সহায়তায় মুন্না গামছায় একটি পাথর বেঁধে তা দিয়ে তার বাবার ঘাড় ও কোমর ভেঙে দেন।

এরপর শামসুল ইসলামের মরদেহ ছাতক নিয়ে গিয়ে সুরমা নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। গাড়ি চালিয়ে মরদেহ নিয়ে গিয়েছিলেন মুন্না নিজেই।

সিলেটের বিভাগীয় স্পেশাল জজ আদালতের পিপি এডভোকেট আনছারুজ্জামান জানান, ২০১১ সালের ১৭ জুলাই বাবার সম্পত্তি দখল ও অর্থ হাতিয়ে নিতে শামসুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে মাসুদ আহমদ চৌধুরী মুন্না ও তার সহযোগীরা শামসুল ইসলামকে হত্যা করে মরদেহ সুরমা নদীতে ভাসিয়ে দেয়। ২২ জুলাই তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দেয় পুলিশ। ২০১৩ সালের ১৫ মে চার্জগঠনের মাধ্যমে শুরু হয় আলোচিত এ মামলার বিচারকাজ। মামলায় ৩০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এই বিভাগের আরো খবর