২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ আগের অর্থবছরের তুলনায় কমেছিল। তবে বাস্তবতা বিবেচনায় নতুন বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো প্রয়োজন। সেটি না হলে শিক্ষার গুণগত মানে তা দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব পাড়তে পারে। জুলাই আন্দোলন–পরবর্তী সময়ে শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো মৌলিক দাবি।
বর্তমানে আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নানা সংকটে জর্জরিত। শিক্ষক–সংকট, দুর্বল অবকাঠামো, আধুনিক প্রশিক্ষণের অভাব ও শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল ডিভাইসের অপ্রতুলতা—এ সবকিছু শিক্ষাব্যবস্থার অগ্রগতিতে বড় বাধা। বাজেটে যদি এ
সমস্যাগুলোর জন্য যথাযথ বরাদ্দ না থাকে, তাহলে সমাধান কীভাবে হবে?
আমরা দেখেছি, প্রাথমিক শিক্ষায় নতুন নিয়োগের ঘোষণা নেই। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে উৎকর্ষ অর্জনে প্রয়োজন তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ। কিন্তু এ খাতের বরাদ্দও কম।
দেশ থেকে বহু শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিচ্ছেন। কেউ কেউ দেশে থেকেই বিদেশি স্কুলে সন্তানকে ভর্তি করাচ্ছেন, যেখানে পাঠদান হচ্ছে বিদেশি ভাষায়। এটি আমাদের জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি একধরনের অনাস্থার বহিঃপ্রকাশ। ফলে শিক্ষার মান বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিতে হবে। বাজেটে এ বিষয়ে বরাদ্দ বাড়ানো ও দিকনির্দেশনা প্রয়োজন।
শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে শুধু ভবিষ্যতের মানবসম্পদই গড়ে তোলা হয় না; একই সঙ্গে জাতির উন্নয়ন কাঠামোর ভিত্তিও নির্মিত হয়। আমরা চাই, স্কুলে দুপুরবেলার খাবার বা মিড ডে মিল চালু করা, দক্ষ ও উৎসাহী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া ও প্রতিটি বিদ্যালয়কে শিক্ষার্থীবান্ধব করা প্রয়োজন।
একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমার চাওয়া, শিক্ষা যেন বাজেট আলোচনার গালভরা শব্দ না হয়ে বাস্তব বরাদ্দ ও সদ্ব্যবহারে পরিণত হয়। এই বাজেট শিক্ষাবান্ধব না হলে ভবিষ্যৎ যে অনিশ্চিত, তা বলাই বাহুল্য।
নিশাত জাহান: শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়