বিশ্বের অন্যতম দ্রুতবর্ধনশীল স্বাস্থ্য সমস্যা। বাংলাদেশেও প্রতি বছর উল্লেখযোগ্য হারে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি মেটাবলিক রোগ, যা শরীরে ইনসুলিনের ঘাটতির কারণে রক্তে শর্করার (গ্লুকোজ) পরিমাণ নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বেড়ে যায়।
ডায়াবেটিস কেন হয়?
ডায়াবেটিস মূলত দুই ধরনের হয়: টাইপ-১ এবং টাইপ-২। এছাড়াও গর্ভকালীন ডায়াবেটিস রয়েছে।
টাইপ-১ ডায়াবেটিস:
এই ধরণের ডায়াবেটিস সাধারণত শিশু বা তরুণ বয়সে হয়ে থাকে। শরীরের রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা প্যানক্রিয়াসে ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষকে ধ্বংস করে দেয়, ফলে ইনসুলিন তৈরি বন্ধ হয়ে যায়।
টাইপ-২ ডায়াবেটিস:
এই ধরণের ডায়াবেটিস বেশি দেখা যায়। এটি সাধারণত বয়স্ক, অতিরিক্ত ওজনদার, কম শারীরিক কার্যকলাপকারী এবং জেনেটিক কারণে হয়ে থাকে। এই ক্ষেত্রে শরীর পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না, অথবা তৈরি ইনসুলিন ঠিকভাবে কাজ করে না।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস:
গর্ভবতী নারীদের একাংশ এই ধরণের ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন, যা পরে নিয়ন্ত্রণে না আনলে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে রূপ নিতে পারে।
ডায়াবেটিসের থেকে প্রতিকার কী?
বর্তমানে ডায়াবেটিসের কোন স্থায়ী চিকিৎসা নেই, তবে সঠিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এর মারাত্মক প্রভাব থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
প্রতিকার ও নিয়ন্ত্রণে যা করণীয়:
1. সুষম খাদ্য গ্রহণ:
চিনি ও কার্বোহাইড্রেট কমিয়ে শাকসবজি, ফলমূল ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত।
2. নিয়মিত ব্যায়াম:
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
3. ওজন নিয়ন্ত্রণ:
অতিরিক্ত ওজন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই স্বাস্থ্যসম্মত ওজন বজায় রাখা জরুরি।
4. ওষুধ সঠিকভাবে গ্রহণ:
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইনসুলিন বা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।
5. নিয়মিত রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা:
নিয়মিত চেকআপের মাধ্যমে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা মনিটর করা প্রয়োজন।
উপসংহার:
ডায়াবেটিস একটি জটিল ও দীর্ঘমেয়াদি রোগ হলেও, সচেতনতা, নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন গ্রহণের মাধ্যমে এ রোগের প্রভাব অনেকাংশে হ্রাস করা সম্ভব। এখনই সময় স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার।