• রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ০১:১০ অপরাহ্ন

চালু হলো বৈদ্যুতিক শাটল বাস

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৬২ টাইম ভিউ
আপডেটঃ শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এলাকায় পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়েছে বৈদ্যুতিক শাটল বাস সার্ভিস। ‘গ্রিন ফিউচার ফাউন্ডেশন’-এর উদ্যোগে চালু হওয়া শব্দ ও ধোঁয়াহীন চারটি শাটল বাস এখন প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত তিনটি নির্ধারিত রুটে চলাচল করছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব যাতায়াতের জন্য এটি একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ হিসেবে এরই মধ্যে প্রশংসা কুড়িয়েছে।

তিনটি রুটে চলা শাটল সার্ভিসের প্রথমটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হল থেকে কার্জন হল, ঢাকা মেডিক্যাল, ফুলার রোড, নীলক্ষেত মোড়, মুহসিন হল, সূর্যসেন হল, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ হয়ে শাহবাগ ঘুরে আবার ফজলুল হক হলে ফিরে আসে।

 

দ্বিতীয় রুটে গাড়িটি মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ থেকে সূর্যসেন হল, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, শাহবাগ, টিএসসি, কার্জন হল, শহীদুল্লাহ হল, ঢাকা মেডিক্যাল, শেখ রাসেল টাওয়ার হয়ে আবার টিএসসি হয়ে মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণে ফিরে আসে।

তৃতীয় রুটটি শুরু হয় কুয়েত মৈত্রী হল এলাকা থেকে। সেখান থেকে গাড়িটি মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণ, ভিসি চত্বর, টিএসসি, কার্জন হল হয়ে পুনরায় কুয়েত মৈত্রী হল এলাকায় ফিরে আসে।

শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই এই বৈদ্যুতিক যানবাহন ব্যবহার করতে পারবেন।

প্রতিটি রুটে সর্বোচ্চ ভাড়া ২০ টাকা এবং সর্বনিম্ন ১০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতি ট্রিপে একজন স্বেচ্ছাসেবক ভাড়া সংগ্রহ করবেন, যিনি নিজেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং গ্রিন ফিউচার ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যুক্ত। 

বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার যানজট ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারী রিকশার দৌরাত্ম্য কমাতে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরেই একটি স্বতন্ত্র পরিবহনব্যবস্থার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। সেই দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই এই পরীক্ষামূলক উদ্যোগ।

 

শিক্ষার্থীদের অনেকেই বলছেন, ক্যাম্পাসে ইলেকট্রিক শাটল বাস চালুর ফলে শুধু পরিবেশবান্ধব যানবাহনের ব্যবহারই বাড়ছে না, এটি যাতায়াতব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তাও নিশ্চিত করছে।

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আলো আক্তার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যাতায়াতে আমাদের বাড়তি ভাড়া গুনতে হয়। এই ইলেকট্রিক শাটল যানবাহন পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি আমাদের জন্য সাশ্রয়ী ও নিরাপদ বিকল্প হয়ে উঠেছে।’

আরেক শিক্ষার্থী রাফিউজ্জামান লাবীব বলেন, ‘গাড়িতে চড়ার সময় কোনো শব্দ নেই, ধোঁয়াও নেই। খুব নিরাপদ লাগে।

ক্যাম্পাসে চলাচলে অতিরিক্ত খরচও কমে আসবে। শাটলের সংখ্যা আরো বাড়ানো হলে রিকশার ওপর নির্ভরতা কমবে এবং যানজটও কমবে।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গ্রিন ফিউচার ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খালিদ হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আমরা অত্যন্ত ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। চাহিদার ভিত্তিতে শিগগিরই গাড়ির সংখ্যা বাড়ানো হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পরিবেশবান্ধব এমন উদ্যোগ শুধু ঢাবির জন্য নয়, দেশের অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্যও অনুসরণযোগ্য উদাহরণ হতে পারে। শিক্ষার্থীদের মধ্যেও এটি পরিবেশ সচেতনতা ও দায়িত্ববোধ গড়ে তুলছে, যা দীর্ঘ মেয়াদে সমাজের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এই বিভাগের আরো খবর