বিচার বিভাগ অতন্দ্র প্রহরীর দায়িত্ব পালন করে যাবে। দেশ ও দেশের মানুষের আইনি ও মৌলিক অধিকার সুরক্ষায় কাজ করে যাবে। এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন আপিল বিভাগে নবনিযুক্ত বিচারপতি ফারাহ মাহবুব।
গতকাল রেরাববার আপিল বিভাগের এজলাস কক্ষে সংবর্ধনার সময় তিনি এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন। অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি থেকে দুই বিচারপতিকে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব তার বক্তব্যে বলেন, প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বিচার বিভাগকে একটি আধুনিক, সময়োপযোগী ও গতিশীল বিভাগ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন। এর বাস্তবায়নের জন্য নিরলসভাবে পরিশ্রম করে চলেছেন। আমি বিশ্বাস করি প্রধান বিচারপতির বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বিচার প্রার্থীরা অচিরেই এই রোডম্যাপের সুফল ভোগ করতে পারবেন। আমাদের বিচার বিভাগ দেশ ও জনগণের আইনি ও মৌলিক অধিকার সুরক্ষায় অতন্দ্র প্রহরীর দায়িত্ব পালন করে যাবে। এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
বিচরপতি ফারাহ মাহবুব আরো বলেন, সুবিচার নিশ্চিত করার জন্য শুধু বিজ্ঞ বিচারকগণই নয়, ন্যায়বিচার নিশ্চিতকরণে বিজ্ঞ আইনজীবীগণও অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। আদালতের অফিস সহায়ক থেকে শুরু করে সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণও এই মহাযজ্ঞের একটি গুরুপূর্ণ অংশ। একটি সুনির্দিষ্ট প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর মধ্যে দিয়ে প্রতিটি মানুষের আইনের আশ্রয় লাভ ও বিচার প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করাই বিচার বিভাগের মূল দায়িত্ব। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও আইনের শাসন রক্ষার অঙ্গীকার নিয়ে ১৮ ডিসেম্বর, ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আনুষ্ঠানিক ভাবে যাত্রা শুরু করে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, বিচার বিভাগের অভিভাবক হিসেবে, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সৃষ্টির উষালগ্ন হতে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে।
আপিল বিভাগের একমাত্র এই নারী বিচারপতি বলেন, আমাদের দেশে এক সময় সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচলিত ধারণা ছিল যে, আইন পেশা নারীদের জন্য উপযুক্ত নয়। অত্যন্ত আনন্দের বিষয় এই যে বর্তমান সময়ে, আমাদের দেশের নারীরা সেই অচলায়তনকে অতিক্রম করে স্বত:স্ফূর্তভাবে আইনপেশার সাথে সংযুক্ত হচ্ছেন। দেশে মোট আইনজীবীর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী আইনজীবী রয়েছেন, যারা আদালতে মামলা পরিচালনায় প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখছেন। বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসে নারী বিচারক মোট বিচারক সংখ্যার প্রায় ৩৫ শতাংশ। যারা দক্ষতার সাথে বিচারকার্য পরিচালনা করছেন। বাংলাদেশের উচ্চ আদালতে নারী বিচারকের সংখ্যা বর্তমানে ১০ জন। এই সংখ্যা অদূর ভবিষ্যতে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এই সংখ্যা বৃদ্ধি শুধু নারীর ক্ষমতায়নের জন্যই নয়। বরং সমাজের সর্বস্তরে ন্যায়বিচারের অভিগম্য নিশ্চিতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ঐতিহ্য অনুসারে অ্যাটর্নি জেনারেল মো: আসাদুজ্জামান ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন দুই বিচারপতির সংক্ষিপ্ত তুলে ধরে বক্তৃতা করেন। পরে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি ফারাহ মাহবুব বক্তব্য রাখেন। এসময় প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ, আপিল বিভাগের সব বিচারপতি এবং এজলাস কক্ষ আইনজীবীদের উপস্থিতিতে এজলাস কক্ষ ছিলো জনাকীর্ণ।
বিভাগ : বাংলাদেশ