বাংলাদেশ ও তুরস্কের মধ্যকার সম্পর্ক আরও গভীর ও বহুমাত্রিক রূপ নিতে যাচ্ছে—এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম এবং পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তুরস্কের আন্তালিয়া শহরে অনুষ্ঠিত আন্তালিয়া ডিপ্লোম্যাসি ফোরাম (Antaliya Diplomacy Forum)-এ শনিবার এই দুই শীর্ষ কর্মকর্তা উভয় দেশের সম্পর্ককে ‘উষ্ণ, ঐতিহাসিক ও সম্ভাবনাময়’ বলে উল্লেখ করেন। তাঁরা জানান, বর্তমান অস্থায়ী সরকার এই সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
এই তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল “Reclaiming Diplomacy in a Fragmented World” বা “বিভক্ত বিশ্বে কূটনীতির পুনরুদ্ধার”। মাহফুজ আলম বলেন, “তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হচ্ছে এবং বাংলাদেশ সরকার সেই সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগাতে আগ্রহী।” তিনি জানান, উভয় দেশই এই সহযোগিতা আরও গতিশীল করতে প্রস্তুত। ভবিষ্যতে দুই দেশের মধ্যে বিনিয়োগ, সংস্কৃতি, প্রযুক্তি ও মানবিক সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলোতে আরও গভীর সমন্বয় হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
রোহিঙ্গা সংকটের প্রসঙ্গেও গুরুত্ব সহকারে কথা বলেন এই দুই উপদেষ্টা। মাহফুজ আলম বলেন, সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘ সম্মেলনে মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা হবে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে। এই সম্মেলনে তুরস্কসহ অন্যান্য বন্ধুপ্রতিম দেশের সঙ্গে বৈঠক এবং সেমিনার আয়োজনের মাধ্যমে সমাধানের রূপরেখা নির্ধারণ হবে। তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা ইস্যুতে তুরস্ক সবসময় বাংলাদেশের পাশে থেকেছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে বলে আমরা আশাবাদী।”
তৌহিদ হোসেন বলেন, “বাংলাদেশ ও তুরস্কের জনগণের মাঝে আন্তরিক ও ঐতিহাসিক বন্ধন রয়েছে। এই সম্পর্ক শুধু রাজনৈতিক বা অর্থনৈতিক নয়, বরং সাংস্কৃতিক ও মানবিক স্তরেও গভীর।” তিনি আরও বলেন, “আমরা এই সম্পর্ককে শুধু সংরক্ষণ করতে চাই না, বরং নতুন দিকেও বিস্তার ঘটাতে চাই।” রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে তিনি জানান, আঙ্কারার সঙ্গে সমন্বয় করে শরণার্থীদের স্বদেশে নিরাপদ প্রত্যাবাসনের উপায় খোঁজা হবে।
এই গুরুত্বপূর্ণ ফোরামে অংশগ্রহণ শুধু কূটনৈতিক সম্পর্ক মজবুত করার একটি সুযোগ নয়, বরং বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় সম্মিলিত উদ্যোগের দরকার কতটা তা তুলে ধরার একটি প্ল্যাটফর্ম। তুরস্কের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের এই ইতিবাচক অগ্রগতি দুই দেশের জনগণের জন্য আশার আলো হয়ে উঠতে পারে—বিশেষ করে মানবিক সংকট নিরসনের মতো ক্ষেত্রে। তথ্যসূত্র : আনাদোলু এজেন্সি