• শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ০৯:০৭ অপরাহ্ন

‘নিষ্ঠুরতম গাজা সংঘাত: জাতিসংঘের মহাসচিব

নিজস্ব প্রতিবেদক / ১৯ টাইম ভিউ
আপডেটঃ রবিবার, ২৫ মে, ২০২৫

ইসরায়েলের নৃশংস হামলা ও খাবারের অভাবে চরম দুর্দশায় রয়েছেন ফিলিস্তিনের গাজার বাসিন্দারা। প্রতিদিনই বাড়ছে লাশের সারি, থামছে না ক্ষুধার্ত শিশুদের কান্না। এমন পরিস্থিতিতে গাজা সংঘাত ‘নিষ্ঠুরতম পর্যায়ে’ প্রবেশ করতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। ইসরায়েল গাজাবাসীদের দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। সম্প্রতি ‘অপারেশন গিডেয়নস চ্যারিয়টস’ নামের অভিযান শুরুর পর হামলার মাত্রা আরও বাড়িয়েছে তারা। এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ১১ সপ্তাহ অবরোধের পর গাজায় প্রতিদিন ১০০ ট্রাক ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেয় ইসরায়েল। তবে এর চেয়ে কম ত্রাণ গাজায় পৌঁছাচ্ছে বলে অভিযোগ জাতিসংঘের।

গত শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের গুতেরেস বলেন, প্রায় ৮০ দিন ধরে প্রাণ বাঁচানোর জন্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ গাজায় প্রবেশ করতে দিচ্ছে না ইসরায়েল। এতে উপত্যকাটির বাসিন্দারা দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছেন। ‘বন্যার মতো’ বিপুল তোড়ে এখন গাজায় ত্রাণ সরবরাহ প্রয়োজন। তবে যে পরিমাণ ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তা ‘এক চামচ’ পানির মতো।

গাজায় মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞ যখন ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছে, তখন ইসরায়েল হামলায় ব্যাপকতা বাড়িয়েছে বলে উল্লেখ করেন জাতিসংঘের মহাসচিব। তিনি বলেন, গাজার ৮০ শতাংশ এলাকাকে সামরিক অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করেছে ইসরায়েল। সেখান থেকে বাসিন্দাদের সরে যেতে বলা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দ্রুত এবং দীর্ঘ মেয়াদে ত্রাণ না পেলে আরও মানুষের মৃত্যু হবে।

আরও পড়ুন

গাজায় নৃশংসতার পর ইউরোপ কি ইসরায়েলকে পরিত্যাগ করছে

গাজায় নৃশংসতার পর ইউরোপ কি ইসরায়েলকে পরিত্যাগ করছে

জাতিসংঘের হিসাবে, গাজায় প্রতিদিন কমপক্ষে ৫০০ ট্রাক ত্রাণ সরবরাহ করা দরকার। ইসরায়েলের হিসাবে, গত সোমবার থেকে কারেম আবু সালেম ক্রসিং দিয়ে উপত্যকাটিতে মাত্র ৩০০ ট্রাক ত্রাণ পৌঁছেছে। তবে জাতিসংঘ বলছে, নিরাপত্তা ও বিশৃঙ্খলার কারণে এই ত্রাণের তিন ভাগের মাত্র এক ভাগ গাজার ভেতরে বিভিন্ন গুদামে পৌঁছাতে পেরেছে।

গাজায় ত্রাণসংকটের কারণে অনেক ত্রাণ সরবরাহ কেন্দ্র ও দাতব্য রান্নাঘর বন্ধ হয়ে গেছে। যেগুলোয় সামান্য খাবার রয়েছে, সেখানে খাবার ও পানির জন্য মানুষের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। গাজা থেকে আল-জাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ বলেন, গত দুই দিনে গাজায় যে খাবার পৌঁছেছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই সামান্য। এর মাধ্যমে উপত্যকাটির মানবিক সংকটের কোনো সমাধান হবে না।

আরও পড়ুন

যে শিশুদের আত্মারা তাড়িয়ে বেড়াবে ইসরায়েলকে

যে শিশুদের আত্মারা তাড়িয়ে বেড়াবে ইসরায়েলকে

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ১৯ মাস ধরে চলমান ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ৫৩ হাজার ৯০১ জন নিহত হয়েছেন। এই সময়ে আহত হয়েছেন ১ লাখ ২২ হাজার ৫৯৩ জন। আর উপত্যকাটির জনসংযোগ কার্যালয়ের হিসাবে, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৬১ হাজার ৭০০ জন নিহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া ব্যক্তিদের মৃত ধরে এ হিসাব করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

জেরুজালেমে প্রায় ৫০০ বছরের পুরোনো মাজার দখল করে বাড়িতে রূপান্তর করেছেন এক ইসরায়েলি


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এই বিভাগের আরো খবর