• রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ০৯:০৬ অপরাহ্ন

জিম যেন রাজকীয় রোলস রয়েস

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৬৭ টাইম ভিউ
আপডেটঃ শুক্রবার, ৯ মে, ২০২৫

বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটির মূল ফটক পেরিয়ে খানিকটা এগোলেই কিংস অ্যারেনা ফুটবল স্টেডিয়াম। মাঠের দক্ষিণ পাশের গোলপোস্টের ঠিক পেছনে দাঁড়িয়ে বিশাল ইমারত। বাইরে থেকে দেখে মনে হবে এটি কোনো ওয়্যারহাউস। কিন্তু ভেতরে ঢোকার পর চমকে যাবে যে কেউ, এ তো জিমন্যাসিয়াম! ওয়ার্ক আউট সেন্টার, কার্ডিও সেশন সেন্টার, ক্রাউ থেরাপি, কোল্ড প্লাঞ্জ, জাকুজি পুল, হিমলয়ান সল্ট বাথরুমসহ নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা দুটি সুইমিং পুল।

সব মিলিয়ে আধুনিক ও অত্যাধুনিক সরঞ্জামের মিশেলে সুবিশাল স্থাপনা। নির্ধিদ্বায় যা দেশের সবচেয়ে বড় এবং পরিপূর্ণ জিম সেন্টার। বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে বসুন্ধরা স্পোর্টস সিটিতে অবস্থিত এই গোল্ড’স জিমের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়েছে গতকাল। প্রধান অতিথি হিসেবে এই জিমের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বসুন্ধরা গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সাফওয়ান সোবহান।
 

https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/1.Print/2025/05. May/09-05-2025/kalerkantho-ft-14a.jpgশারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য জিম অত্যধিক কার্যকরী। এই ভাবনা থেকেই জিম তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সাফওয়ান সোবহান, “সবার আগে ধন্যবাদ দিতে চাই আমাদের চেয়ারম্যান সাহেবকে (আহমেদ আকবর সোবহান), যে বড় একটা লক্ষ্য নিয়ে তিনি এই স্পোর্টস সিটি তৈরি করেছিলেন। তিনি সব সময় বলেন, স্বাস্থ্যই সম্পদ। আমরা যদি স্বাস্থ্যের পেছনে বিনিয়োগ না করি তাহলে সম্পদ দিয়ে কি করব? সেই লক্ষ্যেই এত বড় স্পোর্টস সিটির গোল্ড’স জিম।

এখানে যে সরঞ্জাম আছে—টেকনোজিম, যেটা জিম সংক্রান্ত সরঞ্জামের রোলস রয়েস। আমি বিশ্বের অনেক জিমে গেছি, এত বড় জিম, এত মেশিন… সব আছে এখানে। পাঁচ থেকে ছয় মিলিয়ন ডলার মূল্যের মেশিন আছে এখানে।” ইতালির বিখ্যাত কোম্পানি টেকনোজিম থেকে আনা হয়েছে গোল্ড’স জিমের যাবতীয় সরঞ্জামাদি। আভিজাত্য ও চাকচিক্যে ভরা এই সরঞ্জামগুলোকে অভিজাত রোলস রয়েস গাড়ির সঙ্গে তুলনা করা চলে।
লিমিটেড এডিশন হলেও যেটার মান অনেক উঁচুতে। এমন সরঞ্জাম যে কারোর নজর কাড়তে বাধ্য করবে। এখানে একসঙ্গে জিম সেশন করতে পারবে অন্তত ৮০০ জন। দক্ষিণ এশিয়া তো বটেই, আয়তন ও আভিজাত্যে এশিয়ার মধ্যে এটি অন্যতম জিম সেন্টার। 

এই স্থাপনা তিনটি ফ্লোরে ভাগ করা। নিচতলায় অভ্যর্থনা কক্ষের সঙ্গে থাকছে ক্যাফেটেরিয়া। ডান পাশে ১০০ মিটারের সুইমিং পুল। দ্বিতীয় তলার পুরোটাই নারীদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি। তৃতীয় তলায় কার্ডিও এবং চতুর্থ তলায় ট্রেনিং জোন—যেখানে আছে স্কোয়াট র‌্যাক উইথ আ পুলআপ বার, অলিম্পিক বারবেল, ওয়েট প্লেটস, ফ্ল্যাট বেঞ্চ, ডাম্বেল, স্যান্ড ব্যাগ, রানিং মেশিন, রেসিস্ট্যান্ট ব্র্যান্ডসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি। এখানকার বাড়তি আকর্ষণ হিমালয়ান সল্ট বাথরুম। যে রুমে গিয়ে শ্বাস নিলে ফুসফুস পরিষ্কার করবে। যাদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা আছে তাদের জন্য সল্ট বাথ ভীষণ কার্যকরী। ২১ জন দক্ষ ট্রেইনার দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে এই জিম সেন্টার। আধুনিক যন্ত্রপাতি ও দক্ষ ট্রেনার থাকলেই তো চলবে না, দিতে হবে উন্নতমানের সেবা, যেটা বসুন্ধরা গ্রুপের প্রথম ও একমাত্র চাহিদা। জিমের অপারেশন বিভাগকে এই বার্তাই দিয়েছেন সাফওয়ান সোবহান, ‘আমাদের অপারেশন টিমের এখন মূল কাজ হচ্ছে, মেম্বারদের সেবা দেওয়া। সেবা যদি ভালো না হয়, মানুষের মুখে মুখে যদি এটা না থাকে, সদস্যদের চাহিদামতো যদি দিতে না পারি—তাহলে যে সুযোগ-সুবিধাই দিই না কেন, আমাদের কাছে যে সরঞ্জামই থাকুক না কেন, আপনি গ্রাহক পাবেন না। তাই সেবাই সবার আগে।’

আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে গত দুই মাস পরীক্ষামূলক চলেছে এই জিম। প্রতিদিন অন্তত ২০০ জনের উপস্থিতি ছিল। এখন সংখ্যাটা আরো বাড়বে বলেই আশা করা হচ্ছে। সেরা সেবা দিতে পুরোপুরি প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন গোল্ড’স জিমের অপারেশনস ও মার্কেটিং ম্যানেজার আনিসুল ইসলাম ববি, ‘আমরা সেবা দেওয়ার জন্য শতভাগ প্রস্তুত। আমরা গত দুই মাস ট্রায়াল রান করেছি, কোথায় কোথায় কমতি ছিল সেগুলো ঠিক করেছি। আমরা দেখেছি মেম্বাররা কী ব্যবহার করতে চাচ্ছেন।’

জিমে ওয়ার্ক আউট করে সতেজ হতে পাশের পুলেই নেমে পড়তে পারবে। ক্ষুধা মেটাতে থাকছে ক্যাফেটেরিয়া। এমন সুযোগ-সুবিধা পেয়ে ভীষণ খুশি গোল্ড’স জিমে ওয়ার্ক আউট করতে আসা রিফাত সাইফুর রহমান, ‘সাধারণত জিমের জন্য এক জায়গায় যেতে হয় এবং বিনোদনের জন্য আরেক জায়গায় যেতে হয়। কিন্তু এখানে আপনি সব কিছু একসঙ্গে পাচ্ছেন। ওয়ার্ক আউটের পর রিলাক্স করবেন, জিম করবেন, সুইমিং করবেন, কফিশফ—সব আছে। আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, যখন স্কুল-কলেজে পড়াশোনা করতাম তখন দেখতাম যে সবাই আড্ডা দিত জিমে এসে। বিদেশিদের দেখবেন যে ঐতিহ্যগতভাবেই তারা ফিট। তাদের জীবনযাপনই শুরু হয় জিম দিয়ে। আমাদের সংস্কৃতিটাও পরিবর্তন হচ্ছে। সবাই আড্ডা দিচ্ছে জিমে। আগের চেয়ে এখন বেশি মানুষ জিম করতে আসছে। এ রকম উন্নতমানের জিম যত বেশি আসবে, এ দেশে মানুষ তত আগ্রহী হবে।’ বসুন্ধরা গোল্ড’স জিম সেই দুয়ারই খুলে দিল।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এই বিভাগের আরো খবর