গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে নিহতের সংখ্যা, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হচ্ছে পুরো অঞ্চল। মানবাধিকার সংগঠনগুলো যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানালেও হামলা থামার কোনো লক্ষণ নেই। ইসরায়েলি হামলায় গাজায় লাশের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে, আর এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে নিরীহ সাধারণ মানুষ।
গত তিন দিনে ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় গাজায় প্রায় ৬০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের এই সামরিক অভিযানে এখন পর্যন্ত ৪৯ হাজার ৬১৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শুধু বৃহস্পতিবারই নতুন করে ৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছেন ১৩৩ জন। বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বাড়তে থাকলেও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়াদের উদ্ধার করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর থেকে গাজায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলা শুরু হয়। ইসরায়েলি বিমান ও স্থল হামলার তীব্রতা এতটাই বেড়েছে যে লাশের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। দক্ষিণ গাজার রাফাহ এলাকায় ইসরায়েলের স্থল অভিযানও চলছে। পাশাপাশি বেইত লাহিয়া শহর ও কেন্দ্রীয় অঞ্চলগুলোতে ইসরায়েলি সেনারা অগ্রসর হচ্ছে। ফলে সেখানকার পরিস্থিতি আরও সংকটময় হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে, ইসরায়েলের হামলার প্রতিশোধ নিতে বৃহস্পতিবার হামাস গোষ্ঠী তেল আবিবে রকেট হামলা চালিয়েছে। হামাসের সামরিক শাখা ইজেদাইন আল-কাশেম ব্রিগেডস জানায়, গাজার নিরীহ জনগণের ওপর ‘‘গণহত্যার’’ প্রতিশোধ নিতেই তারা এই হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, গাজা থেকে ছোড়া রকেটগুলোর মধ্যে একটি আটকে দেওয়া হয়েছে এবং বাকি দুটি জনবসতিহীন এলাকায় গিয়ে পড়েছে। ইসরায়েলের দাবি, এই হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
ইসরায়েলের স্থল অভিযান আরও বিস্তৃত করার লক্ষ্যে দেশটির সেনারা গাজার প্রধান উত্তর-দক্ষিণ সড়ক বন্ধ করে দিয়েছে। এতে করে গাজাবাসীর চলাচল ও ত্রাণ সহায়তা পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গাজার মানবিক বিপর্যয় ঠেকাতে যুদ্ধবিরতির দাবি জানাচ্ছে, কিন্তু তা এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।
গাজার মানবিক সংকট দিন দিন ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। নিরীহ ফিলিস্তিনিদের জীবন বাঁচাতে দ্রুত যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক মহলের উচিত দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে এই ধ্বংসযজ্ঞ বন্ধ হয় এবং গাজার জনগণ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা,আনাদোলু এজেন্সি
বিভাগ : আন্তর্জাতিক