সুন্দরবনের কটকা অভয়ারণ্য এলাকায় একসঙ্গে তিনটি বাঘ দেখতে পেয়েছেন পর্যটকরা। তিন বাঘের লড়াইয়ের অনন্য মুহূর্তও ধারণ করেছেন তারা। যা পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
পর্যটকবাহী লঞ্চ “এমভি আলাস্কার” গাইড মো. আল-আমিন জানান, গত ১৯ জানুয়ারি দুপুরে লঞ্চটি কটকার বেতমোড় খালের কাছে আসার পরই একই জায়গায় তিনটি বাঘের উপস্থিতি দেখতে পান লঞ্চের পর্যটকরা। একসঙ্গে থাকা তিনটি বাঘ দেখার অসাধারণ মুহূর্ত প্রত্যক্ষ করেন তারা। বাঘ তিনটির মধ্যে দুইটি পুরুষ ও একটি বাঘিনী।
তিনি আরও জানান, সুন্দরবনের কটকা অফিস পাড় থেকে দুটি বাঘ এবং বেতমোর নদী পেড়িয়ে একটি বাঘ এসে একত্রিত হয়েছিল। কিন্তু বেতমোড় এলাকা থেকে আসা বাঘটিকে অপর দুটি বাঘ আক্রমণ করে প্রথমে নদীতে ফেলে দেয়। নদীতে পড়ে যাওয়া বাঘটি অনেকক্ষণ ধরে পানিতে ভেসেছে। পরে সাতরে উঠে বাঘটি বনের মধ্যে পালিয়ে যায়। এ দৃশ্য ধারণ করেন তিনি।
পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কটকা অভয়ারন্য কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সোয়েবুর রহমান সুমন বলেন, “এমভি আলাস্কা নামের পর্যটকবাহী লঞ্চের ভ্রমণরত পর্যটকরা বনের বেতমোড় এলাকায় একসঙ্গে তিনটি বাঘ দেখেছেন বলে জানিয়েছেন। কিছুদিন আগে কটকার বাদামতলা এলাকায় বনরক্ষীদের টহলদানকালে আমি নিজেই একসঙ্গে চারটি বাঘ দেখতে পেয়েছি।”
চোরা শিকারীর সংখ্যা কমে যাওয়া এবং বাঘ তার সুস্থ আবাসস্থল ফিরে পাওয়ায় সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে শরণখোলা রেঞ্জের চান্দেশ্বর ফরেস্ট টহল ফাঁড়ি এলাকায় একসঙ্গে তিনটি বাঘ ২০ ঘণ্টা ধরে অবস্থান করছিল। তখনও বনরক্ষীরা সেই তিন বাঘরে ছবি ও ভিডিও ধারণ করছেলিনে। যা সামাজকি যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করলে চাঞ্চল্যরে সৃষ্টি হয়।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশের আয়তন ৬,০১৭ বর্গকিলোমিটার। এর মধ্যে বনভূমি ৪,৮৩২ এবং জলাভূমি ১,১৮৫ বর্গকিলোমিটার। ২০১৫ সালের বাঘশুমারি অনুযায়ী, সুন্দরবনে বাঘ ছিল ১০৬টি। আর ২০১৮ সালের শুমারির তথ্য অনুযায়ী, বাঘের সংখ্যা ছিল ১১৪। ২০২৪ সালের বাঘ শুমারিতে বাঘের সংখ্যা দাড়ায় ১২৫টি। সুন্দরবনের চারটি রেঞ্জের মধ্যে শরণখোলায় বাঘের অবস্থান বেশি।