• শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ০৯:০৪ পূর্বাহ্ন

হত্যা মামলায় ৪ ভাইসহ ৮ জনের মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৫৯ টাইম ভিউ
আপডেটঃ বুধবার, ২৮ মে, ২০২৫

সিলেটে শেখ মাসুক মিয়া (৩৫) হত্যা মামলায় চার ভাইসহ ৮ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৬ মে) সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক সৈয়দা আমিনা ফারহিন এ রায় দেন।

জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে মাসুক ২০১৮ সালের ১৩ জুন খুন হন। তিনি ওসমানীনগর উপজেলার ফতেহপুর গুপ্তপাড়া গ্রামের মৃত শেখ মদরিছ আলীর ছেলে।

 

আরো পড়ুন

বিচারপতি মানিক মারা গেছেন

বিচারপতি মানিক মারা গেছেন

 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন ওসমানীনগর উপজেলার ফতেহপুর গুপ্তপাড়া গ্রামের মৃত শেখ মদরিছ আলীর ছেলে ও নিহতের ভাই শেখ আলফু মিয়া (৪১), তার সহোদর শেখ পংকী মিয়া (৪৩), শেখ তোতা মিয়া (৫৭), শেখ আব্দুর রব ওরফে লেবু মিয়া (৬৩), পংকীর স্ত্রী লাভলী বেগম, আব্দুর রউফের স্ত্রী শেখ আনোয়ারা বেগম ওরফে এশাই (৪৮), একই এলাকার মৃত আখলাছ আলীর ছেলে ফখর উদ্দিন ওরফে অহর (৪৬) এবং উপজেলার গ্রামতলা দাসপাড়ার হাজি আলা উদ্দিনের ছেলে হেলাল উদ্দিন ওরফে দিপু মিয়া (৪৩)। তাদের মধ্যে দিপু মিয়া পলাতক রয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্তি পাবলিক প্রসিকিউটর আল আসলাম মুমিন। তিনি জানান, ‘প্রবাসে থাকতে ভাইদের কাছে টাকা পাঠাতেন শেখ মাসুক মিয়া।

কিন্তু সেই টাকা দিয়ে নিজেদের নামে তারা জমি কেনেন। দেশে ফিরে পাঠানো টাকায় কেনা জমি তার নামে লিখে দিতে বললে বিরোধ দেখা দেয়। সেই বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে দুই ভাবি ও চার ভাই মিলে তাকে হত্যা করে।’ 

আরো পড়ুন

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য সুখবর

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য সুখবর

 

মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১৩ জুন বিকেল ৩টায় বাড়ি থেকে গোয়ালাবাজার যাওয়ার জন্য বের হন মাসুক মিয়া।

কিন্তু সন্ধ্যা হলেও তিনি বাড়ি না ফেরায় মোবাইল ফোনে তার স্ত্রী কল করেন। প্রথমে কল ঢুকলেও পরে তা বন্ধ পাওয়া যায়। পরের দিন ওসমানীনগরের দাসপাড়া গফুর মিয়ার বাড়ির পাশে ধানক্ষেতে মাসুক মিয়ার ক্ষতবিক্ষত মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। মরদেহ শনাক্তে এলাকায় মাইকিং করা হয়। সেই সংবাদ পেয়ে নিহতের ভাই আলফু ও শেখ তোতা ঘটনাস্থলে যান এবং ভাইয়ের লাশ শনাক্ত করেন।
এ ঘটনায় আলফু মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয়ে থানায় মামলা করেন। কিন্তু মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ওসমানীনগর থানার তৎকালীন পরিদর্শক এসএম মাঈন উদ্দিন হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে নিহতের ভাই আলফু, পংকী ও তোতাকে আটক করেন। পরে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মমিনুল বাদী হয়ে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। 

পরে ২০১৮ সালের ১৫ জুলাই সিলেটের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আমলি আদালতে সহোদরকে হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দেন আলফু, পংকি ও তোতো। তাদের দেওয়া তথ্যমতে, আসামি ফখর উদ্দিন, লাভলী বেগম, আনোয়ারা বেগম, শেখ হাজি আব্দুর রউফ লেবু মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর ১৬ জুলাই গ্রেপ্তারদের মধ্যে আসামি আনোয়ারা বেগমও একই আদালতে হত্যাকাণ্ডে নিজেদের জড়িয়ে স্বীকারোক্তি দেন। তাদের স্বীকারোক্তি মতে, বর্ণিত মামলার বাদী আলফু মিয়াসহ অন্যান্যা আসামিরা মিলে মাসুক মিয়াকে পরিকল্পিতভাবে জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধে খুন করে।

আরো পড়ুন

গরমে ত্বকের যত্ন নেবে যে সবজি

গরমে ত্বকের যত্ন নেবে যে সবজি

 

এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ৮ মে আদালতে চার সহোদরসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোপত্র (চার্জশিট নং-৫৭)  প্রদান করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসএম মাঈন উদ্দিন। মামলাটি অত্র আদালতে বিচারের জন্য পাঠানো হলে ২০২০ সালের ৮ নভেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার কাজ শুরু করেন। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়ায় শুনানিকালে ২৯ সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক আসামিদের সবাইকে দোষী সাব্যস্ত করে ৩০২/৩৪ ধারায় মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এই বিভাগের আরো খবর