অঞ্জন’স-এর স্বত্বাধিকারী শাহিন আহমেদ বলেন, ‘গরমে আরাম ও সহজে চলাচলের জন্য স্নিগ্ধ রঙের পোশাকের জুড়ি নেই। এ সময় সাদা, নীল, সবুজ, খয়েরি, হালকা বেগুনি, সি গ্রিন রঙের পোশাক পরলে প্রশান্তি পাওয়া যায়। আমরা এবারও এই দুটি দিক প্রাধান্য দিয়ে গরমের আরামদায়ক পোশাক এনেছি।’
গরমে পাতলা বুননের সুতি কাপড় আরামদায়ক। হালকা বুননের কাপড় তাপ সহজে প্রবাহিত করতে পারে। এ জন্য আরাম পাওয়া যায়। তাঁত, লন কিংবা খাদি কাপড়ের কামিজ, কুর্তি, টপস ও পাঞ্জাবি বেছে নিতে পারেন। গরমে লা রিভের টপস-কুর্তিতে মসলিন, ক্রেপ সিল্ক ও ভিসকস কাপড় ব্যবহার করা হয়েছে। কিছু সুতি কাপড়ও ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানান ব্র্যান্ডটির ডিজাইনার মারুফা শিল্পী।
ঢিলেঢালা কাট
গরমে ফুরফুরে থাকতে সুতি ও ঢিলেঢালা কাটের পোশাকই বেশি এসেছে ব্র্যান্ডগুলোতে।
যেমন নকশা
বাটিক, শিবুরি বাটিক, ভেজিটেবল ডাই, স্কিন প্রিন্টের সাহায্যে পোশাকে নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। হালকা রঙের পোশাকে গাঢ় রঙের ফুলেল নকশা, ব্লক প্রিন্ট, ছাপা নকশা, ডিজিটাল প্রিন্ট ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। কে ক্রাফটের সিনিয়র ডিজাইনার শরিফুল হুদা বিপ্লব বলেন, ‘গরমে ভারী কাজ; যেমন—এমব্রয়ডারি, কারচুপি, স্টোন ওয়ার্ক, ডলারের কাজ, রিবন ওয়ার্কের পোশাক এড়িয়ে চলাই ভালো। এ জন্য আমরা হালকা কাজ করা পোশাকের প্রতি বেশি প্রাধান্য দিয়েছি।’ ডিজাইনের ক্ষেত্রে পলকা ডট, স্ট্রাইপ, মার্বেল টেকচারসহ বিভিন্ন ধরনের টেকচার ডিজাইন প্রাধান্য পেয়েছে বলে জানান তিনি।
সাদায় স্বস্তি
সাদা রঙের পোশাক রোদে প্রশান্তি দেয়। সাদা, অফ হোয়াইট—এ ধরনের রঙের সঙ্গে অন্যান্য রঙের মিশেলেও আসে ভিন্নতা। সাদা টপস, ক্রপ টপ, সিঙ্গল কামিজ, স্লিভলেস টপস—সব কিছুরই রয়েছে আলাদা কদর। সাদা কামিজের সঙ্গে পাতলা কাপড়ের পঞ্চ কিংবা স্লিভলেস সাদা কামিজ-টপসের সঙ্গে নীল রঙের কটি বেছে নিতে পারেন। সাদা সামার ফ্রকে গোলাপি রঙের ফুলের নকশার পোশাকও মানানসই।
প্রাকৃতিক উপকরণ ব্যবহার
প্রাকৃতিক উপকরণ দিয়ে করা হয় বলে স্বাভাবিকভাবেই ভেজিটেবল ডাইয়ের পোশাক পরলে আরাম লাগে। ভেজিটেবল ডাইয়ের ক্ষেত্রে কাপড়ে রং করার জন্য কোনো ইলেকট্রিক্যাল ডিভাইস ব্যবহার করা হয় না। পুরো প্রক্রিয়াটি হাতে করা হয়। এতে কোনো কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় না। রঙ বাংলাদেশের স্বত্বাধিকারী ও ডিজাইনার সৌমিক দাস বলেন, ‘ভেজিটেবল ডাই প্রাকৃতিক উপকরণ; যেমন—গাঁদা, হরীতকী, ঢেঁড়স, কাঁচা হলুদ, মেহেদি, খয়ের, সুপারি, অর্জুনের ছাল, লটকন ফলের বীজ ইত্যাদি দিয়ে করা হয়। এ জন্য অন্য সব উপকরণের চেয়ে ডাইয়ের পোশাক বেশি আরামদায়ক হয়। গরমে এগুলোর চাহিদাও বেশি থাকে।’
ট্রেন্ডি যা
স্কার্ট পালাজ্জো, স্ট্রেইট পালাজ্জো, হারেম প্যান্ট, ফরমাল প্যান্ট ও ফ্লেয়ার প্যান্ট আছে ট্রেন্ডে। সহজে চলাফেরা এবং সারা দিন ঘুরে বেড়ানোর জন্য এগুলো আরামদায়ক। ফ্লেয়ার প্যান্টও চলছে বেশ। ছেলেদের ফুলেল নকশা করা হাফ স্লিভ শার্ট এগিয়ে আছে ট্রেন্ডে।
কোথায় পাবেন, দরদাম
আড়ং, তাগা, হরীতকী, বর্ণন লাইফস্টাইলসহ বেশ কিছু ব্র্যান্ডে কটি, টিউনিক, পঞ্চ, সামার ফ্রক ইত্যাদি পেয়ে যাবেন। এ ছাড়া অঞ্জন’স, রঙ বাংলাদেশ, কে ক্রাফট, নিপুণ, সারা, দেশালসহ অন্যান্য ব্র্যান্ডের সালোয়ার-কামিজ, টপস, কাফতান, ওয়ান-পিস, সিঙ্গল কামিজ, এ লাইন ফ্রক, থ্রি-পিস, লনের থ্রি-পিস পাওয়া যাবে। ব্র্যান্ডভেদে পোশাকগুলোর দামের তারতম্য হয়ে থাকে। সর্বনিম্ম ৫৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ দশ হাজার টাকার মধ্যেই পাবেন গরমে আরামের পোশাক।